বেক্সিমকো হেলথ ও জাপানের কে-২ লজিস্টিকের মধ্যে উৎপাদন ও গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত পরামর্শ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে বেসরকারি খাতে একটি নতুন যাত্রার সূচনা হলো বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো।
একই সঙ্গে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সাফল্যের জন্য বেক্সিমকোকে অভিনন্দন জানান নাওকি ইতো। বুধবার (২৪ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় সাভারের আশুলিয়ার কবিরপুর এলাকায় বেক্সিমকো পিপিই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা একে-অপরের সহযোগী হয়ে কাজ করেছি। আজ আমাদের মধ্যে যে চুক্তি হচ্ছে এটি জাপান-বাংলাদেশের মধ্যে বেসরকারি খাতের একটি স্মরণীয় দিন। আশা করি, এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশ সমৃদ্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে যখন পিপিই সংকট দেখা দিয়েছিল, তখন বেক্সিমকো সর্বপ্রথম এগিয়ে আসে। সংকটময় মুহূর্তে আমাদের কর্মীরা ঈদের দিনেও কাজ করে সঠিক সময়ে পিপিই উৎপাদন সম্পন্ন করেছে। আজ এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে যেমন সেতুবন্ধন তৈরি হবে; তেমনি তাদের লজিস্টিক পরামর্শে আমাদের পিপিইর গুণগত মান আরও বৃদ্ধি পাবে।
দুপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন নাওকি ইতো। বেক্সিমকোর স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক ভার্টিক্যাল টেক্সটাইল, গার্মেন্টস ও টেকসই ওয়াশিং প্ল্যান্ট দেখে তিনি প্রশংসা করেন। এ সময় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে জাইকার অর্থায়নে জাপান থেকে আনা অত্যাধুনিক সুদাকোমা লুমস, সাইজিং মেশিন ও র্যাপিং মেশিন উদ্বোধন করেন নাওকি ইতো।
এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ভার্টিক্যাল বেক্সিমকো হেলফ পিপিই পার্ক দেখে অভিভূত হন জাপানি রাষ্ট্রদূত। যেখানে বেক্সিমকো হেলথ মেল্ট-ব্লোন, লেমিনেশন, আইসোলেশন ও সার্জিক্যাল গাউন, সার্জিক্যাল মাস্ক, এন-৯৫ ক্যাপ টাইপ ও ফোল্ডেবল টাইপ মাস্ক, কেএন-৯৫ মাস্ক, এফএফপি-১, এফএফপি-২ মাস্ক, সুকভার, হেডকভার ও ইটিও জীবাণুনাশক সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের পিপিই তৈরি হয। এসব পণ্য সম্পূর্ণ পরিষ্কার, নিরাপদ ও জীবাণুমুক্ত পরিবেশে সেলাই ও প্রক্রিয়াজাত করা হয়।
অতিথিরা ইন্টারটেক ল্যাব পরিদর্শন করেন। বেক্সিমকো ও ইন্টারটেক সম্মিলতভাবে এই আন্তর্জাতিক মানের পিপিই ল্যাব গড়ে তুলেছে। যেখানে পিপিইর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড ও মান পরীক্ষা করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ডিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ নাভিদ হোসেন। দুই দেশের প্রতিনিধিদের বক্তব্যে পেশাগত পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণে জাপানিজ প্রযুক্তি ও সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান ও বেক্সিমকো পিপিই লিমিটেডটের নির্বাহী পরিচালক ডা. মহিদুস সামাদ খান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইটোচু ঢাকা অফিসের জিএম ও জাপানিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তেতসুরো কানো, মারুবেনি ঢাকা অফিসের জিএম ও জাপানিজ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হিকারু কায়াই, জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকায়া, জেট্রো ঢাকা অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজো আন্ডো ও কে-২ লজিস্টিক বাংলাদেশ লিমিটেডের উপদেষ্টা ডা. মোয়াজ্জেম হুসাইন।