পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো গ্রীন সুকুক আল ইস্তিসনা’র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বন্টনের জন্য বন্ডের ট্রাস্টি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এর কাছে মুনাফার ১৭৪ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেছে বেক্সিমকো লিমিটেড। আজ বুধবার (২২ জুৃন) এই টাকা হস্তান্তর করা হয়।
বেক্সিমকোর নির্বাহী পরিচালক মোঃ মোস্তফা জামান অর্থসূচককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র অনুসারে, চলতি বছরের ৬ মাসের ব্যবসা থেকে মুনাফার এই অর্থ জমা দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ২ জুন বন্ডের ট্রাস্টি কমিটি আলোচিত সময়ের জন্য ৫ দশমিক ৮০ হারে মুনাফা বিতরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২২ জুন। অর্থাৎ এদিন পর্যন্ত যাদের বিও একাউন্টে এই সুকুক আছে, তারা ঘোষিত মুনাফা পাবেন। আজ রেকর্ড তারিখে বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে মুনাফার মোট অর্থ হিসেবে ১৭৪ কোটি টাকা হস্তান্তর করা হয়।
প্রসপেক্টাস অনুসারে, প্রতি ছয় মাস পর পর ৫ বছর মেয়াদি বন্ডের রিটার্ন বা মুনাফা প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে রিটার্ন নির্ধারণ হবে কমপক্ষে ৯ শতাংশ। এর সাথে যোগ হবে প্রযোজ্য মার্জিন।
বেক্সিমকো লিমিটেডের আগের বছরের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ঘোষিত লভ্যাংশ ও ভিত্তিমূল্যের ব্যবধানের ১০ শতাংশ মার্জিন হিসাবে নির্ধারণ করা হবে। যদি লভ্যাংশের হার ঘোষিত সর্বনিম্ন রিটার্নের সমান বা কম হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা শুধু ৯ শতাংশ মুনাফা পাবেন। আর বেক্সিমকোর ঘোষিত লভ্যাংশ ৯ শতাংশের বেশি হলে বাড়তি লভ্যাংশের ১০ শতাংশ সুকুকের মুনাফার সঙ্গে যুক্ত হবে।
বেক্সিমকো লিমিটেড সর্বশেষ ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরে ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ থেকে সুকুকের সর্বনিম্ন রিটার্ন ৯ শতাংশ বাদ দেয়া হলে থাকে ২৬ শতাংশ। এর ১০ শতাংশ হয় ২ দশমিক ৬০ শতাংশ। সুকুকের চূড়ান্ত রিটার্ন হিসেবে তাই ৯ শতাংশের সাথে এই ২ দশমিক ৬০ শতাংশ মার্জিন যোগ করা হয়েছে। এতে বার্ষিক রিটার্নের হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ। ছয় মাসের জন্য এর অর্ধেক (১১.৬০/২) হিসেবে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ রিটার্ন ঘোষণা করা হয়।
গ্রিন সুকুক আল ইস্তিসনা ইস্যু করে বেক্সিমকো লিমিটেড ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। ঘোষিত রিটার্ন অনুসারে, ৩ হাজার কোটি টাকার মোট রিটার্ন দাঁড়ায় ১৭৪ কোটি টাকা। এই টাকার চেকই আজ আইসিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেক্সিমকো গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মোঃ মোস্তফা জামান।
শরিয়াহভিত্তিক বন্ড বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক আল ইস্তিসনা’র মাধ্যমে সংগ্রহ করা ৩ হাজার কোটি টাকা বেক্সিমকো লিমিটেড তার দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেডের নির্মাণকাজে ব্যয় করছে।
এছাড়া সুকুকের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের একটি অংশ বেক্সিমকো লিমিটেডের বস্ত্র খাতের ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা এবং পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ নিশ্চিতে ব্যবহার করার কথা।
বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল ইস্তিসনাতে রয়েছে বন্ডকে শেয়ারে রূপান্তরের সুবিধা। সুকুকধারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলে প্রতি বছর তার ধারণকৃত সুকুকের ২০ শতাংশ বেক্সিমকোর শেয়ারে রূপান্তর করতে পারবেন।